চাকা আবিষ্কার মানবসভ্যতাকে এক হ্যাঁচকা টানে উন্নতির হাইওয়েতে এনে বসিয়েছে এ নিয়ে এখন আর বিতর্ক নেই। বিজ্ঞানের নিত্যনতুন আবিষ্কার সবাই মানব কল্যাণে এটা শাসকদের বোলচাল। আবিষ্কার হয়তো কল্যাণকর, কিন্তু তা কতোটা মানবসভ্যতার জন্য, সেটা নির্ভর করে আবিষ্কারের সুফল-কুফল বণ্টন করার দায়িত্ব কাদের হাতে তাদের শ্রেণী চরিত্রের ওপর। আমাদের দেশের শাসক শ্রেণী মুলত সামন্তবাদী ধ্যানধারণার ধারক বলে তাদের হাতে যে বিজ্ঞান বা টেকনোলজিই পড়ুক না কেন তার প্রয়োগ নিত্যই শোষণমূলক। কল্যাণমূলক কদাপি। আমরা এখন আর বিজ্ঞান বিজ্ঞান করি না। এই জমানার প্রিয় শব্দ টেকনোলজি। আরো খোলাসা বললে ' আইটি'। অর্থাৎ ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজি।
আমাদের টেকনোলজি ঢেঁকিতে ধান ভানা বন্ধ করে দিয়েছে। বৈঠা-লগি প্রায় তুলে দিয়েছে। এখন আর ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ করে কলুবাড়ির গরুটা ঘানি টানে না। এখন আর নবধূ নাইওর যাওয়ার সময় নৌকার ছইয়ের ফাঁক দিয়ে বিদায় জানায় না। বাস বা রিকশা-ভ্যান এখন বাহন। এখন আর অতিপরিচিত ডাকপিয়ন চিঠি দিয়ে জল খাবারের আশায় দাওয়ায় বসে থাকে না। মাইলের পর মাইল হাঁটা ক্লান্ত পথিক বটবৃক্ষতলে বিশ্রামের জন্য বসে না। ধুলো উড়িয়ে বাসগুলো বটতলা অতিক্রম করে। এ সকল ক্ষেত্রে বাঙালির টেকনোলজি তার সহজিয়া নষ্টালজিয়া কেড়ে নিয়েছে। বদলে দিয়েছে খানিকটা আধুনিকতা। খানিকটা টেকনোলজি। খানিকটা স্বাচ্ছন্দ্য। ব্যাস। কিন্তু তার জীবনে এই টেকনোলজি বা তথ্যপ্রবাহ শোষণের যে মাত্রা বহাল করেছে তা যদি সে ঘুণাক্ষরেও টের পেতো তাহলে জীবন দিয়ে হলেও এই টেকনোলজি প্রতিহত করতে চাইতো।
ঢাকার মতো তথাকথিত মেট্রোপলিটন শহরের মধ্যবিত্তদের বেজায় ক্ষোভ। কেন তারা সস্তায় পণ্যসামগ্রী পাচ্ছে না? খবর পড়ছে, খবর দেখছে, খবর গিলছে, যে অমুক মোকামে টম্যাটো দু টাকা কেজি বিকোচ্ছে না। রাশি রাশি পথের ধারে পড়ে আছে। ক্ষোভে-দুঃখে উৎপাদক ঝাঁকা সমেত ফেলে দিচ্ছে! অথচ ঢাকায় তা অগ্নিমূল্যে কিনতে হচ্ছে! মধ্যবিত্তরা কোনোভাবে এই হিসাব মেলাতে পারছে না। ভাড়াটে গবেষকরা গালভরা বুলি আউড়েছিল অমুক ব্রিজটা হলে খুব কম দামে খুব দ্রুত পণ্য প্রবাহ বাড়বে এবং ভোক্তারা সস্তায় পণ্য পাবে। গবেষকরা ভাড়া নিয়েই সন্তুষ্ট। তারা খোঁজখবর করে না যে টেকনোলজি বা আধুনিকতার নিয়ন্ত্রক শ্রেণী কে? একপক্ষ বলছে মোবাইল টেকনোলজি চালু হওয়ার পর আগের মতো ক্ষুদে উৎপাদকরা বঞ্চিত হচ্ছে না। কারণ সে জেনে যাচ্ছে একটা মিষ্টি কুমড়ো ঢাকায় ৫০ টাকায় বিকোচ্ছে। সুতরাং কিছুতেই সে ৩০/৪০ টাকার কমে বেঁচবে না। বস্তুত ঘটছে ঠিক এর উল্টোটা। মোবাইল টেকনোলজির কারণে ফড়ে জানতে পারছে কতোতে কিনলে কতো থাকে। আর সে হিসাবে সে কেনাটা নিয়ন্ত্রণ করছে। কারণ সে জানে পথে অন্তত কুড়িখানেক ঘাটে তাকে বখরা দিতে হবে। যে বখরার একটা অবশিষ্টাংশ শেষাবধি ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত পৌঁছাবে। সুতরাং যে যে দামেই কিনুক বখরা তাকে গুণতেই হবে। তাই বখরা যোগ বিক্রয় সমান সমান-লাভ এই হিসাব কষে সে কিনতে পাচ্ছে পানির দামে। শেষাবধি উৎপাদক গরিব কৃষক প্রাতরিত হচ্ছে। যেমনটি হতো সে এই টেকনোলজির প্রয়োগের আগে। বরং আগের চেয়ে প্রতারণাটা বেড়েছে। কারণ টেকনোলজি আমদানি করেছে অসম প্রতিযোগিতা। গরিব কৃষকের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা।
এতো গেলো উৎপাদিত পণ্যের বিপণন বিষয়। গরিব কৃষক এখন যে পণ্য উৎপাদন করবে তার মধ্যে টেকনোলজি প্রবেশ করিয়ে পুরো ব্যাপারটা থেকে গরিব কৃষককে উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। হাইব্রিড বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ ইত্যাদির জোগান তাকে দিতেই হবে। তা নাহলে তার পণ্য বিকোবে না। আর এতোসব জোগান দিতে তাকে দ্বারস্থ হতে হবে টেকনোলজির মালিক তস্করদের। সেখানে একটা ঘষা পয়সাও সে ছাড় পাবে না। ইচ্ছা করলেই এখন আর সে ঘরের কোণে লাউ বীজ পুঁতে লাউ ফলাতে পারবে না। কারণ তার ট্রাডিশনাল বীজের ফসল ফলতে যে সময় লাগবে তার আগেই হাইব্রিড ফসল বাজারে উঠে যাবে। সেই বাজার সে ধরতে না পারলে তার নামি ফসল নামি-ই হয়ে যাবে। অর্থাৎ তাকে কোনো না কোনোভাবে কর্পোরেট বিজনেসের পার্ট হতেই হবে। আর তার ফলাফল কী সে তো ভালোভাবেই জানে।
একটা সময় যাতায়াতের অসুবিধা নিয়ে বিস্তর কাব্য উপন্যাস লেখা হতো। মানুষের স্নেহ-মমতা-ভালোবাসা, দুঃখকষ্ট নিয়ে ফেনিয়ে বলা হতো। যাতায়াত সহজলভ্য করেছে টেকনোলজি। এখন গরিব কৃষক বাড়ির দুয়ারে দাঁড়িয়েই যানবাহন পাচ্ছে। ধান্ধাবাজ গবেষকরা যেটাকে ‘সুবিধা’ বলছেন সেটা মূলত হয়ে উঠেছে শোষণের নব্য হাতিয়ার। দরজা থেকে দরজা এই যে যাতায়াতের সুযোগ সেটা করা হয়েছে সাধারণ মানুষের কল্যাণে নয়। করা হয়েছে সাধারণকে শোষণ যন্ত্রের আওতায় আনার জন্য। সাধারণের হেঁসেল অবধি পৌঁছে যাওয়ার জন্য। আগে গরিবরা তাদের ভেতরকার দ্বন্দ্ব-বিবাদ নিজেরাই মিটিয়ে ফেলতো। টেকনোলজি আর কর্পোরেট বেশ্যাগুলো এখন তাকে ফৌজদারী কার্যবিধি আর সাংবিধানিক অধিকার শেখাচ্ছে। ফলে খুব সহজেই বাঁশপাতা নিয়ে বিবাদে রাষ্ট্রের লাঠিয়াল পুলিশ গরিব গুরবোদের ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। ফলাফল কাড়ি কাড়ি টাকার শ্রাদ্ধ। আগে ওই গরিব চাষার জীবনে ভাত তেল নুন ছাড়া অন্য কিছুর খুব একটা আবশ্যকতা ছিল না। এখন কর্পোরেট বেশ্যাগুলো ছেনালি করে তাকে প্রলুব্ধ করে তার ভোগেচ্ছা বাড়িয়ে তার দুয়ারের সামনে হাজির হচ্ছে মিনিপ্যাক কমোডিটিজ নিয়ে। মাচার তলেকার কুমড়োটা বেঁচে তার বউ চামড়া মসৃণ করার ক্রিম কিনছে।
টেকনোলজির হাজার রকম শোষণকে যথাযথ আর জায়েজ করার জন্য দিনরাত ঠাণ্ডা ঘরে বসে ভাড়াটে সংস্কৃতিকজীবীরা ‘পরিশ্রম’ করে যাচ্ছেন। এদের হাজারো রকমের ভোগেচ্ছা পয়দা এবং সেই ভোগেচ্ছা বাস্তবায়নের পরিণতির ভেতর যে লাভ তারা বের করছে তাতো করছেই, যখন প্রয়োজন হচ্ছে যে গরিব কৃষক বা গরিব চাষাকে সব কিছুতে প্রতিযোগিতা করতে দেওয়া হবে না, তখন তার জন্য তারা সরকারের বিভিন্ন ফ্যাকাল্টিতে টেকনোলজি ঢুকিয়ে তা চাষাদের জন্য অনতিক্রম্য করে তুলছে।
টিআইএল, বিআইএন, ইউটিআইএন, বিওএন নম্বার সিস্টেম করে সবকিছু থেকে অশিক্ষিত চাষাকে হটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এখন ইচ্ছা করলেই কোনো চাষা টাকা জমিয়ে শেয়ার ব্যবসা করতে পারবে না। গ্রামের গরিব কৃষক টাকা জমিয়ে এফডিআর করতে পারবে না। অর্থাৎ টেকনোলজি আর আইটি প্রয়োগ করে গরিব চাষাকে একে একে সকল সেক্টর থেকে হটিয়ে শুধুমাত্র ডেইলি লেবার পদটাতে কাজ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
চাষারা এখন যাই করুক তা শেষ পর্যন্ত দৈনিক দেহশ্রম ছাড়া অন্য কিছু নয়। তার শ্রমের অধিকার, শিক্ষার অধিকার, চিকিৎসার অধিকার, মুক্ত শ্বাস নেওয়ার অধিকার, এমনকি তার হাঁটা চলার অধিকারটুকুও কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে ওই আইটি। তার বদলে চাষাকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে সেলফোন। সে ফোনকার্ড কিনে কুঁই কুঁই করে দুঃখের বয়ান করছে। আর ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে ঋণের এককানা কাগজ যার নাম মাইক্রোক্রেডিট। চাষা যা উৎপাদন করছে তা চাষার একহাত থেকে অন্য হাতে যাচ্ছে। মুখে উঠছে না। আবার তার মুত্যৃও হচ্ছে না। ভারী ধনন্তরী এক খেলা।
আমাদের টেকনোলজি ঢেঁকিতে ধান ভানা বন্ধ করে দিয়েছে। বৈঠা-লগি প্রায় তুলে দিয়েছে। এখন আর ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ করে কলুবাড়ির গরুটা ঘানি টানে না। এখন আর নবধূ নাইওর যাওয়ার সময় নৌকার ছইয়ের ফাঁক দিয়ে বিদায় জানায় না। বাস বা রিকশা-ভ্যান এখন বাহন। এখন আর অতিপরিচিত ডাকপিয়ন চিঠি দিয়ে জল খাবারের আশায় দাওয়ায় বসে থাকে না। মাইলের পর মাইল হাঁটা ক্লান্ত পথিক বটবৃক্ষতলে বিশ্রামের জন্য বসে না। ধুলো উড়িয়ে বাসগুলো বটতলা অতিক্রম করে। এ সকল ক্ষেত্রে বাঙালির টেকনোলজি তার সহজিয়া নষ্টালজিয়া কেড়ে নিয়েছে। বদলে দিয়েছে খানিকটা আধুনিকতা। খানিকটা টেকনোলজি। খানিকটা স্বাচ্ছন্দ্য। ব্যাস। কিন্তু তার জীবনে এই টেকনোলজি বা তথ্যপ্রবাহ শোষণের যে মাত্রা বহাল করেছে তা যদি সে ঘুণাক্ষরেও টের পেতো তাহলে জীবন দিয়ে হলেও এই টেকনোলজি প্রতিহত করতে চাইতো।
ঢাকার মতো তথাকথিত মেট্রোপলিটন শহরের মধ্যবিত্তদের বেজায় ক্ষোভ। কেন তারা সস্তায় পণ্যসামগ্রী পাচ্ছে না? খবর পড়ছে, খবর দেখছে, খবর গিলছে, যে অমুক মোকামে টম্যাটো দু টাকা কেজি বিকোচ্ছে না। রাশি রাশি পথের ধারে পড়ে আছে। ক্ষোভে-দুঃখে উৎপাদক ঝাঁকা সমেত ফেলে দিচ্ছে! অথচ ঢাকায় তা অগ্নিমূল্যে কিনতে হচ্ছে! মধ্যবিত্তরা কোনোভাবে এই হিসাব মেলাতে পারছে না। ভাড়াটে গবেষকরা গালভরা বুলি আউড়েছিল অমুক ব্রিজটা হলে খুব কম দামে খুব দ্রুত পণ্য প্রবাহ বাড়বে এবং ভোক্তারা সস্তায় পণ্য পাবে। গবেষকরা ভাড়া নিয়েই সন্তুষ্ট। তারা খোঁজখবর করে না যে টেকনোলজি বা আধুনিকতার নিয়ন্ত্রক শ্রেণী কে? একপক্ষ বলছে মোবাইল টেকনোলজি চালু হওয়ার পর আগের মতো ক্ষুদে উৎপাদকরা বঞ্চিত হচ্ছে না। কারণ সে জেনে যাচ্ছে একটা মিষ্টি কুমড়ো ঢাকায় ৫০ টাকায় বিকোচ্ছে। সুতরাং কিছুতেই সে ৩০/৪০ টাকার কমে বেঁচবে না। বস্তুত ঘটছে ঠিক এর উল্টোটা। মোবাইল টেকনোলজির কারণে ফড়ে জানতে পারছে কতোতে কিনলে কতো থাকে। আর সে হিসাবে সে কেনাটা নিয়ন্ত্রণ করছে। কারণ সে জানে পথে অন্তত কুড়িখানেক ঘাটে তাকে বখরা দিতে হবে। যে বখরার একটা অবশিষ্টাংশ শেষাবধি ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত পৌঁছাবে। সুতরাং যে যে দামেই কিনুক বখরা তাকে গুণতেই হবে। তাই বখরা যোগ বিক্রয় সমান সমান-লাভ এই হিসাব কষে সে কিনতে পাচ্ছে পানির দামে। শেষাবধি উৎপাদক গরিব কৃষক প্রাতরিত হচ্ছে। যেমনটি হতো সে এই টেকনোলজির প্রয়োগের আগে। বরং আগের চেয়ে প্রতারণাটা বেড়েছে। কারণ টেকনোলজি আমদানি করেছে অসম প্রতিযোগিতা। গরিব কৃষকের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা।
এতো গেলো উৎপাদিত পণ্যের বিপণন বিষয়। গরিব কৃষক এখন যে পণ্য উৎপাদন করবে তার মধ্যে টেকনোলজি প্রবেশ করিয়ে পুরো ব্যাপারটা থেকে গরিব কৃষককে উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। হাইব্রিড বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ ইত্যাদির জোগান তাকে দিতেই হবে। তা নাহলে তার পণ্য বিকোবে না। আর এতোসব জোগান দিতে তাকে দ্বারস্থ হতে হবে টেকনোলজির মালিক তস্করদের। সেখানে একটা ঘষা পয়সাও সে ছাড় পাবে না। ইচ্ছা করলেই এখন আর সে ঘরের কোণে লাউ বীজ পুঁতে লাউ ফলাতে পারবে না। কারণ তার ট্রাডিশনাল বীজের ফসল ফলতে যে সময় লাগবে তার আগেই হাইব্রিড ফসল বাজারে উঠে যাবে। সেই বাজার সে ধরতে না পারলে তার নামি ফসল নামি-ই হয়ে যাবে। অর্থাৎ তাকে কোনো না কোনোভাবে কর্পোরেট বিজনেসের পার্ট হতেই হবে। আর তার ফলাফল কী সে তো ভালোভাবেই জানে।
একটা সময় যাতায়াতের অসুবিধা নিয়ে বিস্তর কাব্য উপন্যাস লেখা হতো। মানুষের স্নেহ-মমতা-ভালোবাসা, দুঃখকষ্ট নিয়ে ফেনিয়ে বলা হতো। যাতায়াত সহজলভ্য করেছে টেকনোলজি। এখন গরিব কৃষক বাড়ির দুয়ারে দাঁড়িয়েই যানবাহন পাচ্ছে। ধান্ধাবাজ গবেষকরা যেটাকে ‘সুবিধা’ বলছেন সেটা মূলত হয়ে উঠেছে শোষণের নব্য হাতিয়ার। দরজা থেকে দরজা এই যে যাতায়াতের সুযোগ সেটা করা হয়েছে সাধারণ মানুষের কল্যাণে নয়। করা হয়েছে সাধারণকে শোষণ যন্ত্রের আওতায় আনার জন্য। সাধারণের হেঁসেল অবধি পৌঁছে যাওয়ার জন্য। আগে গরিবরা তাদের ভেতরকার দ্বন্দ্ব-বিবাদ নিজেরাই মিটিয়ে ফেলতো। টেকনোলজি আর কর্পোরেট বেশ্যাগুলো এখন তাকে ফৌজদারী কার্যবিধি আর সাংবিধানিক অধিকার শেখাচ্ছে। ফলে খুব সহজেই বাঁশপাতা নিয়ে বিবাদে রাষ্ট্রের লাঠিয়াল পুলিশ গরিব গুরবোদের ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। ফলাফল কাড়ি কাড়ি টাকার শ্রাদ্ধ। আগে ওই গরিব চাষার জীবনে ভাত তেল নুন ছাড়া অন্য কিছুর খুব একটা আবশ্যকতা ছিল না। এখন কর্পোরেট বেশ্যাগুলো ছেনালি করে তাকে প্রলুব্ধ করে তার ভোগেচ্ছা বাড়িয়ে তার দুয়ারের সামনে হাজির হচ্ছে মিনিপ্যাক কমোডিটিজ নিয়ে। মাচার তলেকার কুমড়োটা বেঁচে তার বউ চামড়া মসৃণ করার ক্রিম কিনছে।
টেকনোলজির হাজার রকম শোষণকে যথাযথ আর জায়েজ করার জন্য দিনরাত ঠাণ্ডা ঘরে বসে ভাড়াটে সংস্কৃতিকজীবীরা ‘পরিশ্রম’ করে যাচ্ছেন। এদের হাজারো রকমের ভোগেচ্ছা পয়দা এবং সেই ভোগেচ্ছা বাস্তবায়নের পরিণতির ভেতর যে লাভ তারা বের করছে তাতো করছেই, যখন প্রয়োজন হচ্ছে যে গরিব কৃষক বা গরিব চাষাকে সব কিছুতে প্রতিযোগিতা করতে দেওয়া হবে না, তখন তার জন্য তারা সরকারের বিভিন্ন ফ্যাকাল্টিতে টেকনোলজি ঢুকিয়ে তা চাষাদের জন্য অনতিক্রম্য করে তুলছে।
টিআইএল, বিআইএন, ইউটিআইএন, বিওএন নম্বার সিস্টেম করে সবকিছু থেকে অশিক্ষিত চাষাকে হটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এখন ইচ্ছা করলেই কোনো চাষা টাকা জমিয়ে শেয়ার ব্যবসা করতে পারবে না। গ্রামের গরিব কৃষক টাকা জমিয়ে এফডিআর করতে পারবে না। অর্থাৎ টেকনোলজি আর আইটি প্রয়োগ করে গরিব চাষাকে একে একে সকল সেক্টর থেকে হটিয়ে শুধুমাত্র ডেইলি লেবার পদটাতে কাজ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
চাষারা এখন যাই করুক তা শেষ পর্যন্ত দৈনিক দেহশ্রম ছাড়া অন্য কিছু নয়। তার শ্রমের অধিকার, শিক্ষার অধিকার, চিকিৎসার অধিকার, মুক্ত শ্বাস নেওয়ার অধিকার, এমনকি তার হাঁটা চলার অধিকারটুকুও কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে ওই আইটি। তার বদলে চাষাকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে সেলফোন। সে ফোনকার্ড কিনে কুঁই কুঁই করে দুঃখের বয়ান করছে। আর ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে ঋণের এককানা কাগজ যার নাম মাইক্রোক্রেডিট। চাষা যা উৎপাদন করছে তা চাষার একহাত থেকে অন্য হাতে যাচ্ছে। মুখে উঠছে না। আবার তার মুত্যৃও হচ্ছে না। ভারী ধনন্তরী এক খেলা।
লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): কর্পোরেট শোষণ, কর্পোরেট শোষণ ;
প্রকাশ করা হয়েছে: প্রবন্ধ, সমসাময়ীক রাজনীতি বিভাগে । সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১০ রাত ১২:৫৪
প্রকাশ করা হয়েছে: প্রবন্ধ, সমসাময়ীক রাজনীতি বিভাগে । সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১০ রাত ১২:৫৪
১. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ৩:৫৪
স্বাক্ষর শতাব্দ বলেছেন: ভালো লাগলো
২. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ৩:৫৫
স্বাক্ষর শতাব্দ বলেছেন: আরো লিখুন
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ৩:৫৭
লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ।এ ছাড়া আর কিছু তো পারি না।
৩. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৪:০১
ত্রিভুজ বলেছেন: যদিও টেকনোলজির নিয়ে আপনার এলার্জিটা ঠিক সমর্থন করতে পারছি না, তবুও স্বীকার করছি খুব বাস্তব কিছু কথা তুলে এনেছেন। ভাল লাগলো।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৪:১৩
লেখক বলেছেন: আমার এলার্জি টেকনোলজি নিয়ে নয়,শাসকদের হাতে এর অপব্যাহার নিয়ে (কথাটা তো প্রথম প্যারাতেই ছিল !)
৪. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৪:০৫
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৪:১৫
লেখক বলেছেন: এই সব করে করে দিন কাটে মানুষের.....................
মরার আগে জানতেও পারে না...............................কি-কেন-কবে ??
মরার আগে জানতেও পারে না...............................কি-কেন-কবে ??
৫. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৪:৪৯
আলিফ দেওয়ান বলেছেন: হক সাব, হুশিয়ার। তিরিভুজপাদ সফটোয়ারের পতিষ্ঠাতা সভাপতি, গুগুলের যম, ইসকিপ্ট কিডিদের জানি দুস্মন ছাগুরাম তিরিভুজ কিন্তুক আপনের এলাজি সমর্থন করতে পারতেছেনা। অতএব আপ্নে চুলকাইতে পারবেন না। চুলকাইলেই আপ্নি ইসলামের শতরু, ইহুদিনাসারাদের দালাল।
টেক্নোলজি না থাকিলে তিরিভুজ ছাগুরাম আটাইশে অক্টোবরের সিডির খুচরা বানিজ্য করিতেন কিরুপে?
টেক্নোলজি না থাকিলে তিরিভুজ ছাগুরাম আটাইশে অক্টোবরের সিডির খুচরা বানিজ্য করিতেন কিরুপে?
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৫:০২
লেখক বলেছেন: উহাকে পূবাহ্নেই ছিনিয়াচি।শিকারি বিরালের গোঁপ দেকলেই ছিনা ঝায়।আর খাউকে খাউকে কদমছাঁট+ছশমা দেকলেই ছিনা ঝায়।
সাবদান করার ঝইন্য দইন্যবাদ।
সাবদান করার ঝইন্য দইন্যবাদ।
৬. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৪:৫৭
নুশেরা বলেছেন: কী আশ্চর্য মসৃনতায় কী নিষ্ঠুর সত্যগুলো লিখলেন।
টিভিতে আবেগবেসাতির বিজ্ঞাপনে সেলফোন হাতে উল্লসিত জেলেকে দেখায়। হাস্যকর; ফড়ের হাতে তার বহু আগে ঐ ফোন গিয়েছে। বাস্তবে মধ্যস্বত্বভোগী ট্রেডাররাই সংঘবদ্ধ, ঐ জেলের মতো উৎপাদনকারীরা না।
অনেকদিন আগে হুমায়ূন আজাদের একটা লেখা পড়েছিলাম; প্রযুক্তির ছোঁয়ায় হঠাৎ-উন্নত গ্রাম ঘুরে লেখা। হুবহু মনে নেই, তবে কথাগুলো এমন--- এখানে রবীন্দ্র-নজরুল চেনেনা অনেকেই তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম সবাই জানে। বেগম রোকেয়া এ গ্রামে ঢোকেননি, এসেছেন অঞ্জু ঘোষ। লাইব্রেরী হয়েছে- ভিডিও লাইব্রেরি- একরকম "বই" সেখানে পাওয়া যায় যা পড়া যায়না, দেখতে হয়।
টিভিতে আবেগবেসাতির বিজ্ঞাপনে সেলফোন হাতে উল্লসিত জেলেকে দেখায়। হাস্যকর; ফড়ের হাতে তার বহু আগে ঐ ফোন গিয়েছে। বাস্তবে মধ্যস্বত্বভোগী ট্রেডাররাই সংঘবদ্ধ, ঐ জেলের মতো উৎপাদনকারীরা না।
অনেকদিন আগে হুমায়ূন আজাদের একটা লেখা পড়েছিলাম; প্রযুক্তির ছোঁয়ায় হঠাৎ-উন্নত গ্রাম ঘুরে লেখা। হুবহু মনে নেই, তবে কথাগুলো এমন--- এখানে রবীন্দ্র-নজরুল চেনেনা অনেকেই তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম সবাই জানে। বেগম রোকেয়া এ গ্রামে ঢোকেননি, এসেছেন অঞ্জু ঘোষ। লাইব্রেরী হয়েছে- ভিডিও লাইব্রেরি- একরকম "বই" সেখানে পাওয়া যায় যা পড়া যায়না, দেখতে হয়।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৫:০৯
লেখক বলেছেন: এদেশের এই গিনিপিগদের নিয়ে লেখাপড়া জানা তষ্করদের লাইফটাইম এক্সপেরিমেন্ট চলে আসছে তো আসছেই....কত কাল ধরে চলছে.....আমি-আপনি বলতে গেলেই ডা.টুটুল হয়ে যাব...এসব দেখে আগে আগে থুথু দিতে ইচ্ছে করত, এখন অন্য কিছু ত্যাগের ইচ্ছে হয়।
অ.ট. খুব ফুটফুটে মেয়ে আপনার।মাতৃস্নেহে দীর্ঘজীবী হোক।
অ.ট. খুব ফুটফুটে মেয়ে আপনার।মাতৃস্নেহে দীর্ঘজীবী হোক।
৭. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৫:০২
ভরত নাট্যম বলেছেন: মনজুরুল সাহেবকে একটা কথা কই। এই তিরিভুজ রামছাগলটা টেকনোলজির কিচ্ছু জানে না। সে একটা বিকম ফেল। টেকনোলজির সে কি বুঝবে? তার ধরি মাছ না ছুঁই পানি কমেন্ট থেইকা আশা করি বুঝতে পারছেন।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৫:১৪
লেখক বলেছেন: হ্যাঁ,বুঝতে পেরেছি।সমস্যা নেই। আমি আকাশ দেখতে দেখতে হাঁটি।পেছনে মাটিতে কে কী করল দেখতে পাই না।জুলাই মাসে অন্য একজনের পোস্টে ওর একটা কমেন্ট পড়ে আমি স্তম্ভিত হয়েছিলাম।সেই থেকে এই শ্রীমান আমার হার্ডডিস্কে আছেন !!
৮. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৫:২২
আলিফ দেওয়ান বলেছেন: নাট্টম তুমি এইসব কি বল। তিরিভুজ টেক্নোলজির কিছু জানেনা মানেকি? অবশ্যই জানে। কুথায় গেলে কুন কুন অপেনসর্স পোগ্রাম নামাইয়া জুড়াতালি দিয়া তিরিভুজপাদ সফটোয়ার নামাইতে হয়, সেইটা সে অবশ্যই ভালু জানে। তুমার মত লুকেরা তাহার বিকমফেল বিদ্যার কথা টানাটানি করে, কিন্তু তিরিভুজপাদের মতো নাট্টমপাদ সফটোয়ার বানাইতে পারে না। তুমার মত লুকজনের কারনেই বাঙগালির আজ এই দশা।
৯. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৫:২৩
ভরত নাট্যম বলেছেন: আপনার লেখার বিষয়টা নিয়া আমি একটু দ্বিধায় পড়ে গেছি। কৃষককে যে শেষপর্যন্ত কোনো না কোনোভাবে কর্পোরেট বিজনেসের পার্ট হতেই হচ্ছে এই লাইনটা ভাবাচ্ছে আমাকে। সুন্দর লেখা।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৫:৩৩
লেখক বলেছেন: দশ বছর পর যখন দেখব কৃষকের মাটির হাঁড়িতে কোন বীজ নেই ! তাকে বন্ধাবীজ কিনতে হচ্ছে। সেই বীজের জন্য তৈরি হয়ে টাকাকড়ি নিয়ে মোকামে যেয়ে কোর্পরেট শোরুম থেকে বীজ এবং পদ্ধতি কিনতে হচ্ছে।তখন আমরা মাথাকুটে বলব...ফিরিয়ে দাও আমার সেই বেছন ধান...কেউ দেবে না।কর্পোরেট বিজনেসে ইমোশনের কোন স্পেস নেই !
১০. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৫:৪১
ভরত নাট্যম বলেছেন: ঠিক এই বিষয়টা আমরা ফরহাদ মজহারের নয়াকৃষি আন্দোলনে দেখি। কিন্তু উনি তো বিষয়টা প্রতিষ্ঠা করতে পারছেন না। কোথাও না কোথাও গলদ থেকে যাচ্ছে। নাকি ক্রমে ক্রমে বিশাল হয়ে উঠা কর্পোরেটের থাবাই এই ব্যর্থতার কারণ?
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৬:০৪
লেখক বলেছেন: ফরহাদ মজহার একাই লড়ছেন।তার অবশ্যি আরো কিছু অপ্রয়োজনীয় 'ঘ্যাম' আছে সে জন্য তিনি এই আন্দোলনটা নিয়ে সঙ্ঘ গড়তে চান না।আর আমাদের তথাকথিত প্রগতিশীল মিডিয়ায় এর বিপক্ষ লেখা খুব আহ্লাদ করে ছাপা হয়।টাকায় কী না কিক্রি হয় ! যদিও এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি। তবে সঙ্ঘবদ্ধ ক্যাম্পেইন ছাড়া কিছু হবে না ।
১১. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ভোর ৬:২৮
নুশেরা বলেছেন: মনজুরুল ভাই, মন্তব্যে বন্ধ্যা বীজ বা টার্মিনেটর সীডের প্রসঙ্গ দেখে পেটেন্ট-বাণিজ্যের কথা মনে হল। কিছুদিন আগে পত্রিকায় (সম্ভবত ইনকিলাবের অনলাইন ভার্সনে) দেখলাম নকশি কাঁথার পেটেন্ট ভারত করবে বা করে ফেলেছে। তেমন হৈচৈ হয়েছে বলে মনে হয়নি। আসলে ব্যাপারটা কদ্দূর গড়িয়েছে? পেটেন্ট নিয়ে আপনার কোন লেখা থাকলে এখানে দেয়ার অনুরোধ করছি।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:১৬
লেখক বলেছেন: পেটেন্ট নিয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই।একটু ঘেটে দেখি আগে। তবে ভারত এটা করতেই পারে। আমাদের কর্তারা ভারতবিরোধিতা করার নামে যে রাজনীতি করেন,তার গুঢ়হ অর্থ ভারততোষণ।
টাটা বাংলাদেশে ২০ বিলিয়ন ইনভেস্ট করবে বলে সে সময় নিজামী আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে বেড়াত।আমি সেই সময়েই বলে দিয়েছিলাম "টাটা বাংলাদেশে ইনভেস্ট করতে পারবে না বা করবে না।" এ নিয়ে অনেকেই আমার পিন্ডি চটকে ছেড়েছিল।অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক কলামিস্ট তো আমাকে চ্যালেন্জট্যালেন্জ করে ফর্দিফাই বরে ফেলেছিল। ওই লেখাগুলো এখানে পোস্ট করব ভাবছি।
ভাল থাকবেন।
টাটা বাংলাদেশে ২০ বিলিয়ন ইনভেস্ট করবে বলে সে সময় নিজামী আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে বেড়াত।আমি সেই সময়েই বলে দিয়েছিলাম "টাটা বাংলাদেশে ইনভেস্ট করতে পারবে না বা করবে না।" এ নিয়ে অনেকেই আমার পিন্ডি চটকে ছেড়েছিল।অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক কলামিস্ট তো আমাকে চ্যালেন্জট্যালেন্জ করে ফর্দিফাই বরে ফেলেছিল। ওই লেখাগুলো এখানে পোস্ট করব ভাবছি।
ভাল থাকবেন।
১২. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:২৯
আতিক একটেল বলেছেন: ভাবনাগুলো মিলে আপনার সাথে কিন্তু লিখতে পারিনা আপনার মত করে। অসাধারণ লেগেছে ।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:১৭
লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৩. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:৫৮
কেএসআমীন বলেছেন: চিন্তার বিষয় বটে...
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:১৮
লেখক বলেছেন: হুমমম,চিন্তার বিষয়।
১৪. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৫:০৪
একবাল হুসেন বলেছেন: এই তো চমৎকার একটি লেখা। খুব ভালো লাগলো। ফরহাদ মজহারের লেখা আমার খুবই ভালো লাগে।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৫:০৯
লেখক বলেছেন: এটা ফরহাদ মজহারের লেখা কোন রাতের স্বপ্নে পেলেন ? আন্দাজ ঢিলমারা একটি এথিক্যাল বদভ্যাস।ত্যাগেই মঙ্গল।
১৫. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৫:১১
একবাল হুসেন বলেছেন: এটা ফরহাদ মজহারের লেখা তো বলিনি। একটা কমেন্টে তাঁর নয়া কৃষির কথা দেখলাম। অবশ্য আমার সূত্র উল্লেখ করা উচিত ছিল। সেই জন্য দু:খিত।
১৬. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৫:১২
লাল দরজা বলেছেন: আরো পড়তে চাই।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:২০
লেখক বলেছেন: দেখি, যদি ক্ষমতায় কুলায়....
১৭. ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৫:৩২
আহসান হাবিব শিমুল বলেছেন: আপনি ভালো লিখেছেন কিন্তু "টেকনোলজী" কি ইটসেল্ফ শোষনের হাতীয়ার এমনতরো বাণী ইউটোপিয়ান শোনায়।
সপ্তাহখানেক আগে বাংলাদেশ থেকে দুজন আসছে।বাংগালী আড্ডায় যা হয় দেশের হালচাল নিয়ে আলোচনা।সবাই সিদ্ধান্তে পৌছলো একই ধরনের অর্থনৈতিক অবস্থা সত্ত্বেও আফ্রিকার এই দেশটি বাংলাদেশের চেয়ে ভালো আছে।একজনের যুক্তি কারন বাংলাদেশের মানুষ পত্রিকা বেশি পড়ে, এখানে লোকজন পত্রিকা পড়েনা।তার কথা মতো শুধু তথ্য জানা কোন কামের কথা না।
আমি তার সাথে একমত না, কিন্তু তার বক্তব্যটাও ফেলে দেবার মত কি?
হুমমম..।মোবাইলের চকচকে বিগ্গাপনে মানুষকে প্রতারিত করা সহজ।
কিন্তু আমি এই ৯৫/৯৬ সালেও দেখেছি গ্রামের অনেক বৃদ্ধকে রোদ-বৃষ্টি মাথায় করে ১৫/২০ মাইল দুরের শহরে যেতে প্রবাসী ছেলের
সাথে কথা বলতে।এই ধরনের অসংখ্যা চরিত্র যে আসলেই
টেকনোলজীর সুবিধা ভোগ করছে,সেইটা তো আর অস্বীকার করা যায়না।
সারাবিশ্ব জুড়ে ছড়ানো হাজার ব্লগ সাইট মানুষের ভাবনার বিনিময় যে অনেক সহজ করে দিয়েছে তাতো দেখতেই পাচ্ছি।
সপ্তাহখানেক আগে বাংলাদেশ থেকে দুজন আসছে।বাংগালী আড্ডায় যা হয় দেশের হালচাল নিয়ে আলোচনা।সবাই সিদ্ধান্তে পৌছলো একই ধরনের অর্থনৈতিক অবস্থা সত্ত্বেও আফ্রিকার এই দেশটি বাংলাদেশের চেয়ে ভালো আছে।একজনের যুক্তি কারন বাংলাদেশের মানুষ পত্রিকা বেশি পড়ে, এখানে লোকজন পত্রিকা পড়েনা।তার কথা মতো শুধু তথ্য জানা কোন কামের কথা না।
আমি তার সাথে একমত না, কিন্তু তার বক্তব্যটাও ফেলে দেবার মত কি?
হুমমম..।মোবাইলের চকচকে বিগ্গাপনে মানুষকে প্রতারিত করা সহজ।
কিন্তু আমি এই ৯৫/৯৬ সালেও দেখেছি গ্রামের অনেক বৃদ্ধকে রোদ-বৃষ্টি মাথায় করে ১৫/২০ মাইল দুরের শহরে যেতে প্রবাসী ছেলের
সাথে কথা বলতে।এই ধরনের অসংখ্যা চরিত্র যে আসলেই
টেকনোলজীর সুবিধা ভোগ করছে,সেইটা তো আর অস্বীকার করা যায়না।
সারাবিশ্ব জুড়ে ছড়ানো হাজার ব্লগ সাইট মানুষের ভাবনার বিনিময় যে অনেক সহজ করে দিয়েছে তাতো দেখতেই পাচ্ছি।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:০৯
১৮. ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ২:৫৪ আহসান হাবিব শিমুল বলেছেন: হুমম....আপনার শিরোনাম'টার জন্য মন্তব্যটা করেছি।যদিও সারমর্ম টা অনেক ভাবনার দাবী রাখে।লেখক বলেছেন: না ভাই, টেকনোলজি ইটসেল্ফ শোষণের হাতিয়ার একথা কোথাও বলিনি। রুলিং ক্লাস নিজেদের এক্সট্রিম পয়েন্ট অব রুলসকে পার্মানেন্ট করবার জন্য টেকনোলজিকে শোষণের আর একটা টুলস হিসেবে ব্যবহার করছে। আমার লেখাটা সেটা নিয়েই।
আজ যে মানুষের ভোগেচ্ছাকে আর্টিফিসিয়ালি বাড়িয়ে মিনি/ম্যাক্সিজি/জাম্বু/ফ্যামিলি সাইজের কমোডিটিজ চাষার দোরগোঁড়ায় হাজির করা হচ্ছে, তার ফলেই চাষার বউ মাচার তলেকার কুমড়োটা বেঁচে বিউটি ক্রিম কিনতে অভ্যস্থ হচ্ছে।
টেকনোলজি তো অনেক কিছু দিয়েছে বললেন।ইদানিং সারা বিশ্বে RTI বা "রাইট টু ইনফরমেশন" চালু হয়েছে।রাষ্ট্রের সকল ইনফরমেশন যেখানে জনগণের জানার অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে।বলুন তো আমরা এই টেকনোলজির চরম বিকোশিত অবস্থায় থেকেও কি কি জানি ? ২২ টি ইনফরমেশন সরকার ডেডব্লক করে দিয়েছে ! আমরা কি জানি তা ? এই "আরটিআই" নিয়ে একটা পোস্ট দেওয়ার চেষ্টা করব।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আজ যে মানুষের ভোগেচ্ছাকে আর্টিফিসিয়ালি বাড়িয়ে মিনি/ম্যাক্সিজি/জাম্বু/ফ্যামিলি সাইজের কমোডিটিজ চাষার দোরগোঁড়ায় হাজির করা হচ্ছে, তার ফলেই চাষার বউ মাচার তলেকার কুমড়োটা বেঁচে বিউটি ক্রিম কিনতে অভ্যস্থ হচ্ছে।
টেকনোলজি তো অনেক কিছু দিয়েছে বললেন।ইদানিং সারা বিশ্বে RTI বা "রাইট টু ইনফরমেশন" চালু হয়েছে।রাষ্ট্রের সকল ইনফরমেশন যেখানে জনগণের জানার অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে।বলুন তো আমরা এই টেকনোলজির চরম বিকোশিত অবস্থায় থেকেও কি কি জানি ? ২২ টি ইনফরমেশন সরকার ডেডব্লক করে দিয়েছে ! আমরা কি জানি তা ? এই "আরটিআই" নিয়ে একটা পোস্ট দেওয়ার চেষ্টা করব।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আর রাইট টু ইনফরমেশন আমি জানিনা,কিন্তু আপনি জানেন তো।ব্লগের উন্মুক্ত পরিবেশ থেকে জেনে নিবো।এইটাও কিন্তু আমি টেকনোলজীরই পজিটিভ ইফেক্ট হিসেবেই দেখি।
আর যত লোক এই টেকনোলজীর সুবিধা পাবে, তত বেশী ভয়েস পাবে,তত বেশী সরকারের উপর চাপ তৈরি হবে।জানি টেকনোলজি শোষণের কাছে ব্যবহৃত হয়,কিন্তু সেই শোষণকে ভাংগতে সর্বস্তরে টেকনোলজীর প্রসার কাজে আসতে পারে।
ধন্যবাদ।